প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা কেমন আছো? আশা করি সবাই ভালো আছো। আজকে আমি তোমাদের সাথে
অনলাইনে ধোকা দেওয়ার ব্যাপারে কিছু কথা বলতে চাই। প্রথমে একটি সত্যিকারের বাস্তব
একটা কাহিনী তুলে ধরতে চাই।
bKash and bKrash
তোমরা সবাই জানো যে,
বিকাশে মানুষকে ধোকা দিয়ে মানুষের টাকা নিজের অ্যাকাউন্ট এ ট্রান্সফার করছে। এজন্য
আমরা এখন টেলিভিশনে প্রায় একটা বিজ্ঞাপন দেখি। বিজ্ঞাপনটা হলো এরকম যে, এক বয়স্ক
মহিলা। তার একটি বিকাশ অ্যাকাউন্ট আছে। তাকে কোন এক ব্যক্তি কল করে বলল যে, ভুল
করে তার বিকাশ অ্যাকাউন্ট এ ৫০০০ টাকা ঢুকে গেছে। এখন মহিলাটি ভদ্র স্বভাবের। তিনি
গেলেন বিকাশ এজেন্ট এর কাছে টাকা পাঠানোর জন্য। এজেন্টকে মহিলা সব কথা খুলে বলল,
তখন এজেন্ট বলল আপনি আপনার বিকাশ ব্যালেন্স চেক করুন। যখন চেক করা হয় তখন দেখা যায়
বিকাশে কোন ব্যালেন্স যোগ হয়নি। তখন এজেন্ট তাকে বুঝিয়ে বললেন যে বিকাশে এরকম
ধোকাবাজি এখন শুরু হয়েছে। তাই আপনি এরকম মানুষের কথাই বিশ্বাস করবেন না। মহিলাটি
তার ভুল বুঝতে পারলেন।
এটা হল একটা
বিজ্ঞাপন। এখন আমার স্বচক্ষে দেখা কাহিনিটি বলি। কাহিনিটা ৩১ অক্টোবর ২০১৬ এর।
আজকে বিকালে ৫ টার দিকে বিকাশ এজেন্ট এর মাদ্ধমে এক বন্ধু বিকাশে ৫০০০ টাকা পাঠালো।
ঐ দিন রাত ৯ টার দিকে আমাদের বিকাশ নম্বরে একটা কল আসল।
লোক -
হ্যালো।
আমার ভাই - হ্যালো।
লোক -
আজকে আপনাকে বিকাশে টাকা পাঠানোর সময় দুইবার আপনার অ্যাকাউন্ট এ টাকা চলে গেছে।
আপনি কি ঐ টাকাটা আমাকে পুনরায় পাঠিয়ে দিবেন?
আমার ভাই -
থামেন আগে আমি আমার ব্যালেন্স চেক করি।
(কিছুক্ষণ পর)
লোকটি কল করল।
লোক - কি হল ব্যালেন্স আসলো?
আমার ভাই - না। কোন ব্যালেন্স তো আসেনি। (ব্যালেন্স
চেক করার পর)
লোক - ঠিক আছে। আমি বিকাশ কোম্পানির সাথে
কথা বলে দেখি। দেখবেন অবশ্যই টাকা ঢুকবে।
আমার ভাই - ঠিক আছে। দেখেন।
তারপর আমি আমার ভাই
এর সাথে আলাপ করলাম।
আমি - কি হলো?
আমার ভাই - কে যেন কল করে বলতেসে যে মোবাইলে ডবল
টাকা ঢুকল।
আমি - দেখি চেক করি। টাকাটা তো ধুকে নি।
আর কোন মেসেজও নেই।
কিছুক্ষণ পর লোকটি
কল করল।
লোক -
আমি বিকাশ কোম্পানির সাথে কথা বলেছি। তাঁরা বলছে শীঘ্রই আপনার অ্যাকাউন্ট এ টাকা
ঢুকবে। আর এখন আপনার মোবাইলে ব্যালেন্স কত?
আমার ভাই -
২৪, ৭৩২ টাকা।
লোক -
ঠিক আছে।
কিছুক্ষণ আমাদের বিকাশ নম্বরে একটা মেসেজ আসলো। মেসেজটার ছবি নিচে দেওয়া
হল।
আমি আমার ভাইয়ের মধ্যে আলাপ।
আমি - মনে হয়, এখন টাকা ঢুকে গেছে। ব্যালেন্স চেক করে দেখ।
আমার ভাই - ব্যালেন্স তো ঢুকেনি।
আমি - তখন আমার সন্দেহ হল। আমি মনে মনে ভাবলাম তাহলে অবশ্যই
মেসেজটা নকল। আমি যখন মেসেজ দেখতে গেলাম তখন দেখলাম, মেসেজটা আলাদা একটা জায়গা
তৈরি করেছে। অ্যান্ড্রোয়েড এ যে কোম্পানির মেসেজ আসে সেটা সব সময় একই গ্রুপে ঢুকে।
কিন্তু এবার ঢুকেনি। তাই আমি মেসেজ দুইটা ভালো ভাবে লক্ষ্য করলাম। দেখলাম একটা bKash আর একটা bKrash.
তখন আমরা বুঝতে পারলাম যে, এটা বিকাশ কোম্পানি
মেসেজ পাঠায়নি। এটা অন্য কেউ বিকাশের মত নাম করে মেসেজ পাঠিয়েছে।
এখন আমরা জানি যে সে আমাদের ধোঁকা দিতে চাচ্ছে।
কিছুক্ষণ পর লোকটা কল করল।
লোক -
কি হল? ঢুকেছে?
আমার ভাই -
হ্যাঁ ঢুকেছে।
লোক -
তাহলে কি টাকা পাঠানো যাবে?
আমার ভাই -
না।
লোক -
কেন?
আমার ভাই -
মেসেজ ঢুকেছে, ব্যালেন্স তো ঢুকেনি।
লোক -
ঠিক আছে আপনি টাকা পাঠিয়ে দিন। ঐ ব্যালেন্সটা আপনার অ্যাকাউন্ট এ যো হয়ে যাবে।
আমার ভাই -
(রাগে) আপনি কি আমাকে বোকা পাইসেন? আমি bkash আর bkrash এর মধ্যে পার্থক্য বুঝিনা।
লোক -
তাড়াতাড়ি কল কেটে দিল।
তাহলে বুঝতে পারলেন
কিভাবে এরা বোকা বানায়। আর আপনারা হয়তো ভাবছে, ঐ মেসেজটা কিভাবে মোট ব্যালেন্স যোগ
করে মেসেজপাঠালো। আপনি আলাপ টা ভালো করে পড়লে দেখবেন আমার ভাই তাকে কথায় কথায়
ব্যালেন্স বলে দিয়েছিল। এখন যে কাউকে বলা যেতে পারে যে, ১০, ২০০ টাকা মোট ব্যালেন্স
এ যোগ করলে কত হবে?
তাই যে কাউকে নিজের
তথ্য দিতে থেকে বেঁচে থাকুন।
অনলাইনে নিরাপদভাবে
ডলার ক্রয়/বিক্রয় করতে এখানে ক্লিক করুন।
No comments:
Post a Comment